Saturday, October 30, 2010

মারামারি করে ভর্তি ইচ্ছুকদের শুভেচ্ছা জানাল ছাত্রলীগ!


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি-ইচ্ছুকদের শুভেচ্ছা জানাতে এসে মারামারি করেছে ছাত্রলীগের দুই পক্ষ। এ সময় রড-চাপাতি নিয়ে কয়েক দফা পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
গতকাল শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন এলাকায় হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল ও জহুরুল হক হলের ছাত্রলীগের কর্মীদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। ক্যাম্পাস সূত্র জানায়, ভর্তি-ইচ্ছুকদের শুভেচ্ছা জানাতে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা গতকাল একটি শুভেচ্ছা মিছিলের আয়োজন করে। এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে ভর্তি পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগেই বিভিন্ন হল থেকে ছাত্রলীগের কর্মীরা মিছিল নিয়ে মধুর ক্যানটিনে জড়ো হতে থাকেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মুহসীন হলের ছাত্রলীগের কর্মীরা এমনই একটি মিছিল নিয়ে মধুর ক্যানটিনে যাচ্ছিলেন। এ সময় কলাভবনের সামনের রাস্তায় দাঁড়ানো জহুরুল হক হলের কর্মী বরকতের সঙ্গে মুহসীন হলের কর্মী তুষারের ধাক্কা লাগে। শুরু হয় দুজনের মধ্যে বাগিবতণ্ডা। একপর্যায়ে মুহসীন হলের ছাত্রলীগের কর্মীরা এসে বরকতকে বেধড়ক পেটান।
এ ঘটনার পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ছাত্রলীগের শুভেচ্ছা মিছিল বের হলে জহুরুল হক হলের ছাত্রলীগের কর্মীরা কলাভবন ও ডাকসুর মধ্যবর্তী স্থানে তুষারকে পেটান। এরপর মুহসীন হলের ছাত্রলীগের সভাপতি মুহাম্মদ আলীর অনুসারী ২৫-৩০ জন কর্মী হলের ৪৬৫ নম্বর কক্ষ থেকে লোহার রড, চাপাতি নিয়ে মধুর ক্যানটিনের দিকে ধেয়ে আসেন। এ সময় পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়ে আসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই ভয়ে দিগ্বিদিক ছুটতে থাকেন। দলটি মধুর ক্যানটিনের কাছাকাছি এলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বাধা দিলে মুহসীন হলের ছাত্রলীগের কর্মীরা পিছু হটেন। তাঁরা অবস্থান নেন জহুরুল হক হলের গেটসংলগ্ন রাউফুন বসুনিয়া চত্বরে। সেখানে পুলিশ অবস্থান নিলে দুপুর সাড়ে ১২টায় মুহসীন হলের কর্মীরা হলে ফিরে যান।
হল সূত্রে জানা যায়, বরকত জহুরুল হক হলের ছাত্র এবং ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক গোলাম শাহরিয়ারের কর্মী। শেখ ফরহাদুজ্জামান তুষার ছাত্রলীগের মুহসীন হল শাখার সভাপতি মুহাম্মদ আলীর কর্মী।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুহাম্মদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় জহুরুল হক হলের ছাত্রলীগের কর্মীরা মিছিলের গতি রোধ করলে মারামারি বাধে। গোলাম শাহরিয়ার বলেন, ‘বরকত একসময় আমার কর্মী ছিল। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হওয়ার পর থেকে তার সঙ্গে তেমন যোগাযোগ নেই।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কে এম সাইফুল ইসলাম খান প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে জড়িত ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।
গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘খ’ ইউনিটের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে এ বছরের প্রথম বর্ষের ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়। ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাসের বাইরের ৬৩টি কেন্দ্রে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত পরীক্ষায় ২৮ হাজার ৪২২ জন ছাত্র অংশ নেন।

No comments:

Post a Comment